বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী রাষ্ট্রের মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বিশেষত উপকূলীয় দ্বীপাঞ্চলগুলোর অবস্থা আরও শোচনীয়। নিঝুম দ্বীপের ৩৫ হাজার মানুষের জন্য নেই কোনো পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল। প্রসূতি মায়েদের প্রসবকালীন জটিলতায় মৃত্যু, দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়া—এসব ঘটনা তাঁদের জীবনের অংশ।
সম্প্রতি রোকসানা নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু এই বাস্তবতাকে আরও করুণ করে তুলেছে। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা না পেয়ে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। কিন্তু দীর্ঘ পথ ও অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থার কারণে তাঁর অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। শেষ পর্যন্ত জেলা হাসপাতাল নেওয়ার পথে নদীতে নৌকাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। নিঝুম দ্বীপে শুধু মাতৃস্বাস্থ্য নয়, সামগ্রিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাই নাজুক।
সাধারণ জ্বর, সর্দি থেকে শুরু করে বড় কোনো দুর্ঘটনা হলে চিকিৎসার জন্য দ্বীপবাসীকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জেলা শহরে যেতে হয়। মূলত মৎস্যজীবী ও কৃষক দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অনেকের পক্ষেই তা সম্ভব হয় না। আর প্রসূতিদের দ্বীপের ভেতরেও যে চিকিৎসা দেওয়া যাবে, তা–ও সমস্যাসংকুল। নিঝুম দ্বীপের ভেতরে যাতায়াতব্যবস্থা খুব নাজুক। দ্বীপের একমাত্র পাকা সড়কটি জোয়ারের পানির তোড়ে অনেক স্থানে ভেঙে গেছে। সড়কের একাধিক জায়গায় কালভার্ট ভেঙে গেছে জোয়ারের তোড়ে। বহু বছরেও ভাঙা সড়কটি সংস্কার হয়নি।
নিঝুম দ্বীপে তিনটি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও সেখানে চিকিৎসক নেই, প্রয়োজনীয় ওষুধের ঘাটতি রয়েছে, এমনকি স্বাস্থ্যকর্মীরাও নিয়মিত থাকেন না। দ্বীপে নারী স্বাস্থ্যসেবা ভয়াবহ অবস্থা পার করছে। স্থানীয় ফার্মেসি বা কবিরাজদের মাধ্যমে নারীরা চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকেন। বাল্যবিবাহ এই অঞ্চলে বেশি। অপুষ্টি, রক্তস্বল্পতা এবং নিরাপদ প্রসবের অভাবে গর্ভবতী নারীরা মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকেন।
আগে মা-মণি প্রকল্পের আওতায় কিছুটা সেবা পাওয়া গেলেও, সেটিও বর্তমানে বন্ধ হয়ে গেছে। নারী চিকিৎসক না থাকার কারণে অনেক নারী সেবা নিতেও পারেন না। নিঝুম দ্বীপের বেশির ভাগ নারী প্রসব-পরবর্তী জটিলতায় ভোগেন। মাতৃত্বজনিত জটিলতা যেমন বেশি, তেমনি বেশি শিশুদের অপুষ্টিও।
এই চরম সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। স্বাস্থ্যসেবার এমন অবস্থা দেখে স্থানীয় ব্যক্তিরা একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল স্থাপনের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন ১০ জানুয়ারি ৩০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের দাবিতে অঞ্চলের বাসিন্দারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। সিভিল সার্জন জানিয়েছেন যে ১০ শয্যার হাসপাতালের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর আশু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
সরকারের উচিত অবিলম্বে এই অঞ্চলে আধুনিক হাসপাতালটি স্থাপন নিশ্চিত করা, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া এবং যাতায়াতব্যবস্থা উন্নত করা। নিঝুম দ্বীপবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত না করা হলে আরও কত রোকসানার জীবন অকালে ঝরে যাবে!
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 100,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).