সুনামগঞ্জের নাম উচ্চারণ করলেই চোখে ভেসে ওঠে হাওরের বিস্তীর্ণ জলরাশি। শুষ্ক মৌসুমে হাওরের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় এ জেলা ধানের বড় ভান্ডার। যার কারণে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টি হলে সেখানকার ফসল রক্ষা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা তৈরি হয়। এ ছাড়া এ হাওর জেলা মাছের বড় আধারও।
শুধু অর্থনৈতিকভাবেই নয়, পরিবেশ ও প্রাণ–প্রকৃতির দিক দিয়েও খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ হাওরাঞ্চল। ফলে হাওর এলাকার রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। অথচ সুনামগঞ্জে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের আঞ্চলিক কার্যালয়ের কোনো কার্যক্রমই নেই। কার্যালয়ের ভবন নির্মাণ করা হলেও সেটি পড়ে আছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
সুনামগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, সেখানে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের একটি কার্যালয় হোক। সেই দাবি পূরণ হয়েছে ঠিকই, তবে দিন শেষে মনে হবে তাঁদের সঙ্গে যেন তামাশাই করা হয়েছে। শুরু থেকেই প্রকল্পটি নিয়ে একধরনের অবহেলা ছিল বলে অভিযোগ করেন হাওরবাসীর বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা। আঞ্চলিক কার্যালয়ের ভবন নির্মাণ হলেও চার বছর ধরে সেটি পড়েছিল। এরপর ২০১৬ সালে ফেব্রুয়ারির শেষে ভবনটি উদ্বোধন করেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। কিন্তু সেটি ছিল অনেকটা লোকদেখানো উদ্বোধন। কারণ, এরপর কোনো কার্যক্রমই সেখানে চালু হয়নি।
নির্মাণ ও উদ্বোধন মিলিয়ে ভবনটি এখন ১২ বছর পার করছে। কিন্তু আঞ্চলিক কার্যালয়টি যে উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছিল, এখন পর্যন্ত সেদিকে যাত্রাই শুরু করতে পারেনি। ভবনটির কয়েকটি কক্ষ সরকারি অন্যান্য সংস্থা ব্যবহার করছে। অধিদপ্তরের দুজন অফিস সহায়ক বসেন একটি কক্ষে। তাঁরা মূলত ভবনটি দেখাশোনা করেন। এ প্রতিষ্ঠানসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, লোকবলের সংকটের কারণে আঞ্চলিক কার্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। প্রশ্ন হচ্ছে, এত বছর ধরে কেন সেখানে লোকবল দেওয়া গেল না।
সরকারি ওয়েবসাইটে অধিদপ্তরটি তাদের রূপকল্প (ভিশন) ও অভিলক্ষ্য (মিশন) সম্পর্কে লিখেছে, বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি অঞ্চলের জনগণের টেকসই জীবনমান উন্নয়ন এবং হাওর ও জলাভূমি অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা, বন্যা ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের উন্নত জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করা।
দেশের সবচেয়ে হাওরসমৃদ্ধ জেলা সুনামগঞ্জেই তাদের কোনো আঞ্চলিক কার্যক্রম চালু নেই। তাহলে সেখানকার টেকসই জীবনমান উন্নয়ন, জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা ও বন্য ব্যবস্থাপনা কীভাবে পরিচালনা করছে, তা কতটা সুফল দিচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। রাজধানী শহরে বসে কার্যক্রম চালিয়ে কি হাওরাঞ্চল ও সেখানকার জনগণের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব? বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের বোধোদয় হোক, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 100,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).