ঝালকাঠি জেলার সুগন্ধা নদী থেকে বালুখেকোরা নির্বিচার বালু উত্তোলন করলেও প্রশাসন নির্বিকার।
খবর থেকে জানা যায়, সরকারের নির্ধারিত কোনো বালুমহাল না থাকলেও ঝালকাঠির সুগন্ধা নদী থেকে অবাধে বালু তুলছে একটি চক্র। নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে এই বালু তোলায় শহর রক্ষা বাঁধসহ তিনটি গ্রাম ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। শহরের কুতুবনগর বাসস্ট্যান্ডও যেকোনো সময় নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয় লোকজনের।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০-এর ৪-এর (গ) ধারায় বলা আছে, বালু বা মাটি উত্তোলন বা বিপণনের উদ্দেশ্যে ড্রেজিংয়ের ফলে কোনো নদীর তীর ভাঙনের শিকার হতে পারে, এমন ক্ষেত্রে নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না।
স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু নেতার ছত্রচ্ছায়ায় একটি চক্র বছরের পর বছর সুগন্ধা নদী থেকে বালু তুলছে। প্রশাসন বলছে, বালু তোলার খবর পেলেই অভিযান চালিয়ে ড্রেজারের (খননযন্ত্র) শ্রমিক আটক ও জেল–জরিমানা করা হচ্ছে।
বালু তোলার খবর পেলে প্রশাসন অভিযান চালায়। কিন্তু রাতের আঁধারে যখন বালু তোলা হয়, তখন প্রশাসনের কেউ ঘটনাস্থলে থাকেন না। ঝালকাঠিতে অন্তত ১৬ জনের একটি চক্র বালু তোলার ব্যবসা করে, যা নিয়ন্ত্রণ করেন শহর যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবদুল হক খলিফা। এ ছাড়া জেলা জামায়াতের সদস্য ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর মো. মজিবর রহমানও বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের মধ্যে অহিনকুল সম্পর্ক থাকলেও একসঙ্গে বালু উত্তোলন ও লুট করতে তাদের অসুবিধা হয় না।
একই দিন মেঘনায় বালু উত্তোলনের আরেকটি খবর ছাপা হয়েছে । এতে বলা হয়, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার আটটি মৌজায় অবস্থিত মেঘনা নদী থেকে বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বোরহান খানকে বালু উত্তোলন করতে আটকে দিলেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
বোরহান খান চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০ নম্বর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সেলিম খানের ছোট ভাই। সেলিম খান মেসার্স সেলিম এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে পদ্মা ও মেঘনার ডুবোচর থেকে বালু তুলেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করার অভিযোগ রয়েছে। সেলিম খানের এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে ২০২২ সালের ২ মার্চ ‘“বালুখেকো” চেয়ারম্যান তিনি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সেলিম খানকেও প্রথম হাইকোর্ট বালু তোলার অনুমতি দিয়েছিলেন। ২০২২ সালের ২৯ মে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া সেই রায় বাতিল ঘোষণা করেন।
এরপর সেলিম খানকে সরকারি কোষাগারে বালু তোলার বিপরীতে (রয়্যালটি আদায়) ২৬৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা জমা দিতে বলেছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন। কিন্তু তিনি সরকারি কোষাগারে কোনো টাকা জমা দেননি।
এসব বালুখেকো জেলা প্রশাসনের আদেশকে অগ্রাহ্য করার সাহস পান কোত্থেকে? শুধু শ্রমিকদের কেন ধরা হয়, রাঘববোয়ালদের কেন ধরা হয় না? কেবল মেঘনা ও সুগন্ধা নয়, দেশের প্রায় সব নদী থেকে নির্বিচার বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে নদীগুলোয় ভাঙন দেখা দেয়, লোকালয় হারিয়ে যায়, ঘরবাড়ি হারিয়ে মানুষ উদ্বাস্তু হয়, পরিবেশ বিনষ্ট হয়, নদীর গতিপথও যায় বদলে। সুগন্ধায় বালু উত্তোলনের মাধ্যমে যাতে শহর রক্ষা বাঁধ ও নদীতীরবর্তী গ্রামগুলো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করছি। সেই সঙ্গে সব নদী যাতে জীবন্ত সত্তা হিসেবে রক্ষা পায়, সরকারকে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 500,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).