বাংলাদেশের শ্রমবাজারের ৮৮-৮৯ শতাংশ এখনো অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ওপর দাঁড়িয়ে। এর মানে হচ্ছে কর্মক্ষম প্রায় সাড়ে সাত কোটি মানুষের বিশাল একটা অংশের নিয়মিত কাজের নিশ্চয়তা নেই। এই রূঢ় বাস্তবতায় বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হোক আর রাজনৈতিক কোনো অস্থিরতা হোক, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন শ্রমজীবী মানুষেরা। গত মাসের শেষ দিকে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লাসহ দেশের পূর্বাঞ্চলে যে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়, তার অভিঘাত ব্যাপকভাবেই সেখানকার শ্রমমজীবী মানুষের ওপর পড়েছে।
আকস্মিক বন্যা হলেও তার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। তিন সপ্তাহ পরেও পূর্বাঞ্চলের অনেক জায়গা থেকে বন্যার পানি নামেনি। বন্যায় ১১টি জেলার প্রায় ৫৮ লাখ মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হন। বসতবাড়ি, কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ও অবকাঠামো খাতে ক্ষতির পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকা। স্বাভাবিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় জীবনযাত্রাও স্বাভাবিক হতে পারেনি অনেক জায়গায়। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে দেশজুড়ে গত কয়েক দিনে যে অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে, তাতে করে পূর্বাঞ্চলের অনেক জায়গায় নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
খবর জানাচ্ছে, কুমিল্লার শ্রম বিক্রির হাটে কাজ মিলছে না। প্রতিদিন ভোর থেকেই শহরের কান্দিরপাড়, শাসনগাছা, চৌয়ারা, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার, বিজয়পুর রেলগেট, সুয়াগাজী বাজার, বুড়িচং উপজেলার নিমসার বাজার, লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজার, লাকসামের বিজরা বাজারসহ জেলার অন্তত ২০টি স্থানে শ্রম বিক্রির হাট বসে। এসব হাট থেকে শ্রমিকদের চুক্তিতে কৃষি, রাজমিস্ত্রি ও গৃহস্থালিসহ বিভিন্ন নির্মাণকাজের জন্য নেওয়া হয়। গত ১৯ আগস্ট থেকে জেলার বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। তখন শ্রম বিক্রির হাটগুলোতেও ভাটা পড়ে। এ কারণে শ্রমিকেরা অনেক কষ্টে দিন পার করছেন।
কুমিল্লার শ্রম বিক্রির হাটে আসা শ্রমজীবীরা আসেন মূলত উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো থেকে। কাজের সন্ধানে আসা এসব শ্রমিক বিভিন্ন মেস, স্কুলের বারান্দা, রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম অথবা স্টেশন এলাকার কম দামি কোনো হোটেলে থাকেন। প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার মানুষের কাজের সুযোগ হয় এসব হাটে। দিনে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পারিশ্রমিক পান নির্মাণ ও কৃষিশ্রমিকেরা। আর ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা চুক্তিতে বিক্রি হন গৃহস্থালির শ্রমিকেরা।
বন্যার কারণে এক মাস ধরে নিয়মিত কাজ না পাওয়ায় শ্রমজীবী মানুষেরা দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। কাজ না পাওয়ায় তাঁদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। শুধু কুমিল্লা নয়, একই চিত্র বন্যাকবলিত অন্য জেলাগুলোতে। এ পরিস্থিতিতে বন্যাদুর্গত এলাকায় শ্রমজীবী মানুষের জীবিকার প্রশ্নটি কীভাবে সমাধান করা যায়, তা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় তাঁদের আনা প্রয়োজন।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 100,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).