৫ আগস্ট রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) বিজ্ঞপ্তিতে সরকারি অফিস–আদালতের পাশাপাশি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা বলা হয়েছিল। সে সময়ে দেশে কার্যত কোনো সরকার ছিল না। এ সময়ে বিদ্যালয় পর্যায়ে কোথাও কোথাও অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলেছে। এরপর ৮ আগস্ট নতুন সরকার গঠিত হলেও গতকাল পর্যন্ত সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি–বেসরকারি কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে উঠেছেন।
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের এক পর্যায়ে বিদায়ী সরকার প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ এবং পরে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিল। একই সঙ্গে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক শিক্ষার্থীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ নেওয়া হয়েছিল। সেই অরাজক অবস্থার অবসান হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে আশা করা গিয়েছিল দ্রুততম সময়ে শিক্ষাঙ্গনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে। কিন্তু নানা কারণেই সেটা হয়নি। বর্তমানে প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে ভয়াবহ শূন্যতা বিরাজ করছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, শাহজালাল, জগন্নাথ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগ করেছেন সহ–উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর, প্রাধ্যক্ষরাও। আরও অনেক পদাধিকারী পদত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গণপদত্যাগকে পদত্যাগ না বলে পদত্যাগের মহামারি বলা যেতে পারে। সরকারের পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে এতগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন শূন্য হওয়ার কথা নয়। তবু হয়েছে। এর কারণ মেধা ও যোগ্যতার বদলে দলীয় আনুগত্যের ভিত্তিতে নিয়োগ। যাঁরা দলীয় আনুগত্যের ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন, ক্ষমতার পালাবদলের পর নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন না। কেবল বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সরকারি প্রশাসনেও ব্যাপকভাবে এসব ঘটনা ঘটছে।
দুঃখজনক হলো, রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় যে আলাদা জিনিস, সেই ভেদরেখাও এই পদাধিকারীরা রাখেননি। সমস্যা হলো ১ জুলাই থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে শিক্ষকেরাও কর্মবিরতি পালন করেছিলেন বাধ্যতামূলক পেনশন স্কিমে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে। সেই আন্দোলনে তাঁরা সফল হয়েছেন। বিদায়ী সরকার তাঁদের দাবি মেনে নিয়ে বাধ্যতামূলক পেনশন স্কিম থেকে তাঁদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শিক্ষাঙ্গনে অচলাবস্থার কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমের যে ক্ষতি হলো, তা পুষিয়ে নেওয়া কঠিন হবে। অনেক বছরের চেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট অনেকটাই কমে গিয়েছিল। নতুন করে শিক্ষার্থীদের সেশনজটে পড়তে হবে। এ অবস্থায় অবিলম্বে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার বিকল্প নেই। যেসব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অন্যান্য পদাধিকারী পদত্যাগ করেছেন, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন নিয়োগ দিতে হবে, এটা আমাদের জানা।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, শত শত শূন্য পদে কাদের নিয়োগ দেওয়া হবে? আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকেরা প্রধানত দুই ভাগে বা দলে বিভক্ত। সাদা–নীলের বিরামহীন বিরোধে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য অনেক আগেই হারিয়ে ফেলেছে। ৫ আগস্টের আগে মূলত আওয়ামীপন্থী শিক্ষকেরা বিভিন্ন পদ দখল করে ছিলেন। তাঁদের শূন্য পদে যদি বিএনপিপন্থীরাই পদায়ন পেয়ে যান, সেটা বিচক্ষণতার পরিচয় হবে না। আমরা মনে করি, যতটা সম্ভব দলীয় আনুগত্যের বাইরের শিক্ষক দিয়েই শূন্য পদগুলো পূরণ করা উচিত হবে। সে ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও মেধাকে যেন অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
কাজটি যত দ্রুত হবে, ততই শিক্ষার মঙ্গল।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 100,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).