দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি কি থামবে না আর?

বিশ্ববাজারে সম্প্রতি দ্রব্যমূল্যের দাম কমলেও বাংলাদেশে কমা তো দূরে থাকুক রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থা এফএও’র তথ্য অনুযায়ী,গত আগস্ট মাসে সারা বিশ্বে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে সর্বনিম্ন হয়েছে। এই সময়ে চাল ও চিনি ছাড়া বিশ্ববাজারে প্রায় সব খাদ্যপণ্যের দামই কমেছে। অথচ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী,অক্টোবর মাসে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশে যা গত ১২ বছরের মধ্যে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সর্বোচ্চ রেকর্ড। খাদ্য মূল্যস্ফীতি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ছিল ৭.৭৬ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে ৮.১৩, মার্চে ৯.০৯, এপ্রিলে ৮.৮৪, মে মাসে ৯.২৪, জুনে ৯.৭৩, জুলাইতে ৯.৭৬, আগস্টে ১২.৫৪, সেপ্টেম্বরে ১২.৩৭ এবং অক্টোবরে ১২.৫৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের মার্চ থেকেই খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার যে প্রবণতা শুরু হয়েছে তা আর ঠেকানো যায়নি।

মূল্যস্ফীতির কারণ হিসেবে বেশির ভাগ সময় সিন্ডিকেটের দিকে আঙুল তোলা হলেও এর পেছনে আরও বেশ কিছু কারণ রয়েছে। বাংলাদেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য লাগামহীনভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়ে। কিছু আরতদার পণ্য মজুত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেন। ফলে ওই দ্রব্যের মূল্য হঠাৎ বেড়ে যায়। কিছুদিন আগে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ এটাই ছিল। এতে দেশের সিংহভাগ সম্পদ কুক্ষিগত হয় গুটি কয়েক মানুষের হতে আর ভোগান্তির শিকার হয় বৃহৎ সাধারণ জনগোষ্ঠী।

এ দেশে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ইতিহাস বেশ চমকপ্রদ। ১৯৭২ সালের ৬ মে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার পর প্রতিবছরই ধাপে ধাপে বাড়ানো হয়েছে এর দাম। করোনার সময়কাল থেকে কয়েক দফা জ্বালানির দাম বাড়ানো হলো। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে পরিবহন মালিকদের ধর্মঘটের পরিপ্রেক্ষিতে সব ধরনের বাসের ভাড়াও বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। তেলের এ বৃদ্ধির অজুহাত তুলে বেড়ে গেছে সবকিছুর দাম।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নাগরিক জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে এর প্রভাব আরও ভয়াবহ। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত সবাই ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বিপদে পড়ছে সাধারণ কৃষক, শ্রমিক এবং দিন-আনি-দিন-খাই রোজগারের মানুষজন। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাবে মানুষের জীবনে নেমে এসেছে অনাহার, অপুষ্টিসহ নানা প্রকার জটিল ব্যাধির প্রকোপ। ফলে সার্বিকভাবে এর প্রভাব পড়ে কোনো একটি দেশের জাতীয় ভাবমূর্তিতে।

সম্প্রতি পণ্যের দাম বৃদ্ধি রোধে ভারত সরকার তেলের শুল্ক কমিয়েছে, গ্যাসে ভর্তুকি বাড়িয়েছে, সরবরাহ বাড়িয়ে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। আমেরিকা ও আরও কিছু দেশ চাহিদা বজায় রাখতে বর্ধিত দামের ওপর ভর্তুকি দিচ্ছে। কিন্তু দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির চাপ কমাতে বাংলাদেশে অর্থ মন্ত্রণালয় এমন কোনো ব্যবস্থা কখনো নেয়নি। এ ছাড়া সরকার জ্বালানি খাতে আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট কমিয়ে দিতে পারে। আমাদের দেশে আসছে পরিশোধিত তেল এবং তা আনতে হচ্ছে অধিক মূল্যে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কম মূল্যে আনার সুযোগ আছে, যদি আমরা রিফাইনারি কারখানা স্থাপন করতে পারি। এসব নিয়ে আলোচনা হয় না, কাউকে ভাবতে দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয় না। বরং চোখ বুজে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করাই যেন সহজ পথ-এমনটাই ভেবে নেয় কর্তৃপক্ষ।

প্রতিটি দেশের সরকারই নিজের দেশে দ্রব্যের দাম যাতে সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে না চলে যায় তার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে। আমাদের দেশেও ভোক্তা অধিকার আইনসহ অন্যান্য আইনসমূহ কার্যকর করা দরকার। এ ক্ষেত্রে অসাধু ও অধিক মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কঠোর হাতে দমন করা, বাজারে মনিটরিং বাড়ানো, ভ্রাম্যমাণ আদালতের নিয়মিত অভিযান পরিচালনা, বাজারে দোকানের সামনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তালিকা টাঙ্গিয়ে রাখতে হবে। সর্বোপরি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে বর্ধিত দামের ওপর সরকারি ভর্তুকি প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন।

Reasons for signing.

See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).

View All resone For signin

Reasons for signing.

See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).

Recent News

This petiton does not yet have any updates

Rani Khatun

Started This Abedon.

22 November 2023   3.2 K

0 have signed. Let’s get to 500,000 !

0%
Treands

At 500,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!

Sign This

By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.

Must see setitions

গরুর মাংসের দাম বাড়াবেনই যখন, তখন কদিনের জন্য কমালেন কেন

গরুর মাংসের দাম বাড়াবেনই যখন, তখন কদিনের জন্য...

মাস দুয়েক আগে, কথা নেই বার্তা নেই, গরুর মাংসের দাম হঠাৎ একলাফে কেজিতে ১০০ টাকার বেশি কমে গেল। চারদিকে শোরগোল... Sign This
Loading