গত সোমবার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে সারা দেশে মৃত্যুর সংখ্যা আড়াই শ ছাড়িয়ে যাওয়া খুবই উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২ হাজার ৬৯৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে সারা দেশে মোট ৯ হাজার ৩৮৬ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
তার মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ৫ হাজার ১১ জন এবং ঢাকার বাইরে ৪ হাজার ৩৭৫ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে চলতি বছর মোট ৫১ হাজার ৮৩২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলেও অনেকে পরীক্ষা করান না বা হাসপাতালে ভর্তি হন না। ফলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে তথ্য পায়, প্রকৃতপক্ষে ডেঙ্গু রোগী তার কয়েক গুণ বেশি হবে। ডেঙ্গু রোগের বিপজ্জনক উপসর্গের মধ্যে আছে: ক্রমাগত বমি হওয়া, মাড়ি বা নাক থেকে রক্তপাত, প্রস্রাব ও মলের সঙ্গে রক্তপাত, অনিয়ন্ত্রিত পায়খানা, ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ (যা ক্ষতের মতো দেখাতে পারে), দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস ও ক্লান্তি। এসব উপসর্গ দেখা গেলে দ্রুত পরীক্ষা করে চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ হলো, যেসব রোগী হাসপাতালে মারা গেছেন, তঁাদের ৮০ শতাংশ এসেছেন গুরুতর অসুস্থ হয়ে। অসচেতনতার কারণে অনেকে বিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যান, এটা সত্য।
কিন্তু যঁারা আগেভাগে পরীক্ষা করাতে যান, তঁাদের নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ আছে। সরকারি হাসপাতালে ৫০ টাকায় ও বেসরকারি হাসপাতালে ৩০০ টাকায় ডেঙ্গু পরীক্ষা হয়। স্বাভাবিকভাবে সরকারি হাসপাতালে রোগীদের ভিড় বেশি। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার রিপোর্ট না পেয়ে অনেককে আহাজারি করতে দেখা গেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা কখনো সার্ভারের সমস্যা দেখান, কখনো কিটের অভাবের কথা বলেন।
চিকিৎসকেরা দ্রুত ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু পরীক্ষার ফল দ্রুত না পেলে তঁারা চিকিৎসা নেবেন কীভাবে? বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা অনেকটা গতানুগতিক। তদুপরি ডেঙ্গুর ধরনও বদলে গেছে।
ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা বিষয়ে নানা অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জনস্বাস্থ্যবিদ মুশতাক হোসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, প্রতিটি হাসপাতালে প্রাথমিক পরিচর্যা কেন্দ্র থাকা প্রয়োজন, যেখান থেকে ডেঙ্গু রোগ পরীক্ষার পাশাপাশি রোগীর পরিচর্যা করা হবে। রোগ ধরা পড়ার পর তাঁদের বাড়িতে না পাঠিয়ে কেন্দ্রে রেখেই চিকিৎসা করা প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশে সরকারি বা বেসরকারি কোনো হাসপাতালের সেই সক্ষমতা নেই।
বছরের শুরুতে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ও উদ্যোগী ভূমিকা নিলে হয়তো পরিস্থিতি এতটা নাজুক হতো না। কেবল চিকিৎসা দিয়ে তো ডেঙ্গু নির্মূল করা যাবে না। ডেঙ্গু নির্মূল করতে হলে আগে এডিস মশার উৎসগুলো ধ্বংস করতে হবে।
জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোকে সারা বছরই কাজ করতে হবে। আগে ধারণা করা হতো বর্ষার মৌসুমেই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটে। এখন দেখা যাচ্ছে সারা বছরই এই রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে।
দেশ ডেঙ্গু নির্মূল করতে হলে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। স্থানীয় সরকার সংস্থা ও স্বাস্থ্য বিভাগসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে কাজ করতে হবে সমন্বিতভাবে। সেই সঙ্গে জনসচেতনতাও বাড়ানোর বিকল্প নেই।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 500,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).