সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার হলো, দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। গত কয়েক বছরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার যেভাবে হাজারো গৃহহীনের ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে, সেটা সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এ প্রেক্ষাপটে ছিন্নমূল মানুষের আবাসস্থল খুলনার বাস্তুহারা কলোনির বাসিন্দারা তাঁদের আবাসস্থলের স্থায়ী বরাদ্দ না পাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক।
খুলনার বাস্তুহারা কলোনিতে বর্তমান ১৫ হাজারের বেশি মানুষ বাস করছেন। তাঁরা সবাই শ্রমজীবী ও অত্যন্ত দরিদ্র। ৫০ বছর আগে ছিন্নমূল একেকটা পরিবারের জন্য সেখানে ৪৫০ বর্গফুট জায়গা অস্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ পাঁচ দশকে একেকটা পরিবারে অন্তত তিনটি প্রজন্ম তৈরি হয়েছে।
কিন্তু বরাদ্দ করা জায়গার পরিমাণ বাড়েনি। ফলে সেটুকু জায়গার মধ্যেই ঠাসাঠাসি করে অনেক মানুষকে বাস করতে হচ্ছে। কলোনির বাসিন্দারা নিজেদের উপার্জনের টাকায় কিংবা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে কেউ পাকা, কেউ আধা পাকা ও টিনশেড ঘর বানিয়ে পরিবার নিয়ে থাকছেন। পরিবারগুলোর দাবি, ৪৫০ বর্গফুটের প্লটগুলো তাঁদের নামে স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেওয়া হোক।
খুলনার বাস্তুহারা কলোনির বাসিন্দারা ৫০ বছরেও কেন স্থায়ী মাথা গোঁজার ঠাঁই পাননি, সেটা মোটেও বোধগম্য নয়। ১৯৭০ সালে খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে নির্বাচনী জনসভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিশ্রুতি দেন, তিনি সরকার গঠন করলে ছিন্নমূল মানুষের স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবেন। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু ৩৩ একর জমি বাস্তুহারা কলোনির নামে বরাদ্দ দেন। এ সময় বাস্তুহারা কলোনির উন্নয়ন ও বরাদ্দ নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও ১৯৭৫ সালের বিয়োগান্তক ঘটনা ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে সেই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর ১৯৯৮ সালে কলোনির বাসিন্দাদের স্থায়ী নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তন হওয়ায় সেটা থমকে হয়ে যায়। ২০১৩ সালে আবার উদ্যোগ নেওয়া হয়। গঠন করা হয় সার্ভে কমিটি। সেই কমিটি জরিপ করে ১ হাজার ৫০২টি পরিবারের একটা তালিকা প্রস্তুত করে; কিন্তু এরপরও বাসিন্দাদের নামে প্লটগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী খুলনায় গেলে তাঁর কাছে বাস্তুহারা কলোনির বাসিন্দারা স্মারকলিপি দেন। মন্ত্রী সবাইকে নিয়ে একটা সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দেন। আমরা মন্ত্রীর এই আশ্বাসে আস্থা রাখতে চাই। কিন্তু গত ৫০ বছরে কলোনির বাসিন্দারা যে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে তাতে করে আশাবাদী হওয়ার সুযোগ কতটা? প্রশ্ন হচ্ছে, তাঁরা আর কতকাল গৃহহীন থাকবেন। আমরা আশা করি, খুলনার বাস্তুহারা কলোনির পরিবারগুলোর নামে খুব শিগগির তাঁদের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 200,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).