এই সময়ে দ্রুত যা করতে হবে

চলমান ক্রান্তিকালে রাষ্ট্র-শৃঙ্খলা ফেরানো, জননীতিতে স্বচ্ছতা আনয়ন এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে দরকারি সংস্কার আনতে হবে।

বসে থাকার সময় নেই। সত্যিকার অর্থেই এই দরকারি কাজের তালিকা অতি দীর্ঘ। এর মধ্যে যে কাজগুলোতে এখনই মনোযোগ দেওয়া চাই, তার একটা তালিকা এমন হতে পারে।

১. স্টেকহোল্ডার হিসেবে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে পর্যাপ্ত আলোচনা সাপেক্ষে অতিদ্রুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে।

‘আয়নাঘর’ থেকে শুরু করে রাজবন্দীদের মুক্তির পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সম্পদ এবং মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতই এই মুহূর্তের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বিবেচনা করতে হবে।  

২. রাষ্ট্র সংস্কারে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি গুরুত্ব পাবে। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হ্রাস, সচিবালয়ের ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ, সব সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানপ্রধানের ক্ষমতার কমানো, সংসদ-বিচার বিভাগ-আমলাতন্ত্রে ভারসাম্য তৈরি করতে হবে।

বিচার বিভাগে অতিদ্রুত আওয়ামী নৈরাজ্য এবং দলীয়করণ বন্ধে দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ভিত্তি বানাতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ডজন ডজন স্বাধীন প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, যেখানে কম ক্ষমতার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় আর নাক গলাতে পারবে না।

বাংলাদেশে এমন সংবিধান সংস্কার দরকার, যাতে আইনি কাঠামোতে আর কোনো প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার না হয়ে ওঠে। এই ভিশন বাস্তবায়নের স্বল্প মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি অনুষঙ্গ আছে।

৩. তবে তাৎক্ষণিক গুরুদায়িত্ব হচ্ছে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা। ব্যাংকিং সুশাসন ও পরিচালনা নৈরাজ্য বন্ধ, খেলাপি ঋণ ফেরানো, পাচার বন্ধ, রাজস্ব লিক থামানো, পরিসংখ্যান জালিয়াতি শুধরানো, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ পরিস্থিতি ফেরাতে আলাদাভাবে জাতীয় টাস্কফোর্স তৈরি নিশ্চিত করতে হবে।

পাশাপাশি এলসি কোয়ালিটি নির্ধারণে এক্সপার্টদের নিয়ে দ্রুত টাস্কফোর্স করতে হবে এবং মুদ্রানীতি রিভিউ করতে হবে।

এখানে আমলাদের গুরুত্ব না দিয়ে সাবজেক্ট ম্যাটার এক্সপার্টদের খুঁজে বের করতে হবে।

৪. অতিগুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দেশের পেমেন্ট সিস্টেম, ডিজিটাল পেমেন্ট গেটওয়ে এবং সব ধরনের ডিজিটাল ফাইন্যান্স সার্ভিস ও সিস্টেমে জরুরি মনোযোগ দেওয়া।

এখানে পর্যাপ্ত স্যাবোটাজ নিরাপত্তাঝুঁকি, রেভিনিউ লিকেজ এবং মানি হেইস্টের উইন্ডো এবং নিরাপত্তাগত ঝুঁকি থেকে থাকতে পারে। এসব দ্রুত ডিজিটাল ফরেনসিকের আওতায় আনতে হবে।

পেমেন্ট সিস্টেম, ব্যাংকিং কোর সফটওয়্যার খাত, এনআইডি বিআরটিসিসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার সফটওয়্যার খাতে অনিরাপদ সফটওয়্যার এবং কোম্পানিগুলো শনাক্ত করা না হলে নতুন সরকার আর্থিক শৃঙ্খলা ফেরাতে বেগ পাবে এবং প্রচুর ডিজিটাল নাশকতার মুখে পড়বে।

এই সময় নাগরিক তথ্যশালার নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। পেমেন্ট সার্ভিস এবং আইটি খাতের নিরাপত্তা সুরক্ষা দ্রুত এক্সপার্টদের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স তৈরি করতে হবে।

৫. রাষ্ট্রের সব ধরনের নজরদারির মেকানিজম রিভিউ করা দরকার। সফিস্টিকেটেড এসব সিস্টেমে দেশ–বিদেশের কাদের অ্যাকসেস আছে, সেসব দ্রুত ফরেনসিক না করা হলে সরকারের যোগাযোগ অনিরাপদ থেকে যাবে।

এতে সরকারে অস্থিতিশীলতা তৈরির সুযোগ থেকে যাবে। ইন্টারনেট ও টেলিকম খাত মনিটরিং, এনটিএমসি এবং ল-ফুল ইন্টারসেপ্টের মেকানিজমকে অডিট এবং মনিটরিংয়ের আওতায় আনা জরুরি।

৬. ব্যবসায়ীদের প্যানিক না দিয়ে দ্রুত রাজনৈতিক ফান্ডিং, পাচার এবং ঋণখেলাপিবান্ধব শিল্পগোষ্ঠী ও ব্যবসায় প্রশাসক নিয়োগ করা দরকার পড়বে।

কোনো কোম্পানি যাতে ‘স্যাবোটাজ ফাইন্যান্স’ করতে না পারে। করপোরেট খাতের রাজস্ব লিকেজ নিয়ে আলাদা টাস্কফোর্স লাগবে।

৭. ঢাকার দুই সিটিসহ সারা দেশের সব সিটি করপোরেশনকে দ্রুত পুনর্গঠন করে সহজ ও মানবিক, হয়রানি ও ঘুষহীন নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

ভালো সেবা পেলে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরবে দ্রুত।

৮. বিদ্যুৎ খাতের সেবা নিরবচ্ছিন্নতা নিশ্চিত করে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা এবং পেমেন্ট রিভিউ করতে হবে।

বিদ্যমান বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর প্রকৃত সক্ষমতা, দক্ষতা অডিট করে ক্যাপাসিটি চার্জের ব্যাপারে রাজনৈতিক এবং কারিগরি সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

নিম্ন প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর এবং নিম্ন জ্বালানি দক্ষতার বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে জ্বালানির আমদানিতে সাশ্রয়ের রোডম্যাপ বানাতে হবে।

বিদ্যুৎ খাতের সব পেমেন্ট লিকিং অপচুক্তি বন্ধ করে, ইন্ডামেনটিটি বা দায়মুক্তি আইন রহিত করে এই খাতে জবাবদিহি ফেরাতে না পারলে সরকারের ঋণ এবং দেনার বোঝা কমবে না।

৯. উচ্চ–মধ্য–নিম্ন পর্যায়ের সব ধরনের সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার বৈষম্য বাতিলের এবং মেধাভিত্তিক নিয়োগের স্থায়ী কাঠামো বাস্তবায়ন করা জরুরি।

বেসরকারি খাত কীভাবে দ্রুত কর্মসংস্থান বাড়াতে পারে, তার টার্গেটভিত্তিক ম্যাক্রো (সামষ্টিক) এবং মাইক্রো (ক্ষুদ্র) ইকোনমিক পলিসি তৈরি করা চাই।

আমাদের আর বসে থাকার সময় নেই। দেশের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও কর্মসংস্থান তৈরিতে গুরুত্ব দিতে হবে।

পাশাপাশি দেশের ডিজিটাল খাত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রতিটি সংস্কার এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনায় মেধার সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করতে হবে, এখনই সময় বাংলাদেশকে একটি মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন এবং রাজনীতিতে রূপান্তরের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা, রূপরেখা তৈরি করা এবং এরূপ রাখার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা চাই।

এ জন্য দরকার একটি সভ্য ও আধুনিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। এ বন্দোবস্ত ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ স্বৈরাচারীর উত্থান ঠেকাবে।

Reasons for signing.

See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).

View All resone For signin

Reasons for signing.

See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).

Recent News

This petiton does not yet have any updates

Toufic Ahmed

Started This Abedon.

06 August 2024   3.1 K

0 have signed. Let’s get to 100,000 !

0%
Treands

At 100,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!

Sign This

By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.

Must see setitions

পণ্যের দাম কমাতে সমন্বিত পদক্ষেপ নিন

পণ্যের দাম কমাতে সমন্বিত পদক্ষেপ নিন

বাজারে গত সপ্তাহেও চালের দাম বাড়তির দিকে ছিল। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের দাম দুই থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধিকে... Sign This
পুলিশের করা মামলা,পুরোনো কর্মসংস্কৃতির অবসান হওয়া জরুরি

পুলিশের করা মামলা,পুরোনো কর্মসংস্কৃতির অবসান হওয়া জরুরি

যেই মামলায় ৫ আগস্টের আগে আসামি ছিলেন বিএনপি, জামায়াত ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা, সেই মামলায় এখন আসামি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা।... Sign This
ত্রাণ প্রত্যন্ত এলাকায় দুর্গতদের কাছে পৌঁছাতে হবে

ত্রাণ প্রত্যন্ত এলাকায় দুর্গতদের কাছে পৌঁছাতে হবে

ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেশের ৫০ লাখের বেশি মানুষ। উদ্ধার তৎপরতাসহ গোটা দেশের মানুষ ত্রাণসহায়তা নিয়ে তাঁদের পাশে... Sign This
অলস বসে দুই হাজার কর্মী,বিজেএমসির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি

অলস বসে দুই হাজার কর্মী,বিজেএমসির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া...

পাট ছিল একসময় আমাদের গর্ব। পাটনির্ভর অর্থনীতি এ অঞ্চলের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বড় ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু কয়েক দশক ধরে একের... Sign This
খুচরা বাজারে শৃঙ্খলা আনুন

খুচরা বাজারে শৃঙ্খলা আনুন

অর্থনীতি বেহাল হলে তার ধাক্কা সবার আগে পড়ে বাজারে। সেটিই আমরা দেখে আসছি কয়েক বছর ধরে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির নাভিশ্বাস ওঠা... Sign This
কক্সবাজারে ডেঙ্গু,প্রস্তুতি ও মোকাবিলায় সচেষ্ট হোন

কক্সবাজারে ডেঙ্গু,প্রস্তুতি ও মোকাবিলায় সচেষ্ট হোন

ডেঙ্গু একসময় রাজধানী ঢাকার সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হতো। ডেঙ্গু মোকাবিলায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও দিন শেষে তার খুব একটা সুফল... Sign This
ছাত্র–জনতার প্রতিবাদের ভাষা বুঝুন

ছাত্র–জনতার প্রতিবাদের ভাষা বুঝুন

সরকার একদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে, অন্যদিকে তাঁরা যাতে ঘরে না থাকতে পারেন, সেই... Sign This
উন্নয়নের নামে নির্বিচার গাছ কাটা যাবে না

উন্নয়নের নামে নির্বিচার গাছ কাটা যাবে না

যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে সড়ক প্রশস্ত করার প্রয়োজন কেউ অস্বীকার করবে না। কিন্তু সেই সড়কের উন্নয়ন বা প্রশস্ত করার নামে নির্বিচার গাছ... Sign This
ইয়াং ছেলে দেখলেই কি ধরে নিয়া যা লাগব?

ইয়াং ছেলে দেখলেই কি ধরে নিয়া যা লাগব?

‘রাত একটা। আজিমপুর কলোনি নিশ্চুপ। আধঘণ্টা আগে একটা কল এসেছিল, কোয়ার্টারে কিছু একটা ঘটছে। আরেকটা কল। অনলাইন হয়ে দেখি, কিছু... Sign This
‘এ লাশ আমরা রাখব কোথায়’

‘এ লাশ আমরা রাখব কোথায়’

সারি সারি গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী। শত শত মানুষের জটলা, চিৎকার। ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, কারও হাতে, কারও পায়ে, কারও কোমরে,... Sign This
Loading