সবুজ প্রকৃতি, নদী, খাল ও জীববৈচিত্র্যের কারণে অনন্য এক সৌন্দর্য বহন করে সুন্দরবনঘেঁষা উপকূলীয় জনপদগুলো। তবে লবণাক্ত পানির কাছে সেখানকার সব সৌন্দর্য যেন ম্রিয়মাণ। জনপদগুলোর বাসিন্দারাই সেই যন্ত্রণার ভুক্তভোগী। ব্যবহার্য ও পান করার সুপেয় পানি সংগ্রহের জন্য যে কঠিনতর সংগ্রাম শুরু হয়েছে সে প্রান্তিক অঞ্চলে, তার কতটুকু খোঁজই–বা আমরা রাখি। সেই সংগ্রামে আছে হার না মানার গল্পও।
প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার মানুষ আগে থেকেই পানির সংকটে ভুগছিলেন। ২০০৭ সালে সিডরের পর সেই সংকট আরও তীব্র হয়ে যায়। সাউথখালী ইউনিয়নের ১১টি গ্রামের সুপেয় পানির ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা চেষ্টা করলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সুপেয় পানির ব্যবস্থা সেখানে গড়ে ওঠেনি। এমন পরিস্থিতিতে খুড়িয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা রাসেল আহমেদ যে কাজ করেছেন, তা অবিশ্বাস্য। এক মাস ধরে মাটি কেটে গ্রামবাসীর জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছেন তিনি।
সিডরের কারণে গ্রামের অনেকের মতো রাসেলের পরিবারও ঘরবাড়ি হারিয়েছিল। সেই সঙ্গে তঁাদের পুকুরটিও। সেটিই ছিল গ্রামের একমাত্র পুকুর, যেখান থেকে গ্রামবাসী পানি সংগ্রহ করতেন। এখন পুকুরটিও হারিয়ে যাওয়ায় গ্রামবাসী অসহায় হয়ে পড়েন। গ্রামের দেড় হাজারের বেশি মানুষের পাশে দাঁড়ালেন তখন রাসেল। পার্শ্ববর্তী আরেকটি গ্রামের সুপেয় পানির পুকুর থেকে খুড়িয়াখালীতে পানি নিয়ে আসার ব্যবস্থা করলেন। কাজটি কোনোভাবেই সহজ ছিল না। কিন্তু তারুণ্যের শক্তি দিয়েই সেই কঠিনতর কাজকে সহজ করলেন তিনি।
পাইপ দিয়ে আরেক গ্রাম থেকে পানি আনার জন্য কয়েক কিলোমিটার দূরত্বের মাটি কাটতে হয়েছে। দুই গ্রামের মধ্যখানে আছে লবণাক্ত পানির খাল। সেই খালের তলদেশ দিয়ে এসেছে পাইপ। এর জন্য রাসেল মাসব্যাপী দিন–রাত এক করে শুধু মাটি কেটেছেন। নিজের কোদাল-ঝাঁকা নিয়ে কাজটি একাই শুরু করেছিলেন তিনি। পরে সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন গ্রামের মানুষ। এভাবে গ্রামটির পানির কষ্ট কিছুটা হলেও দূর হয়েছে।
রাসেল একজন আপাদমস্তক পরোপকারী মানুষ। দুর্যোগে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ত্রাণ দিতে ছোটেন, বনের একটি পাখি ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে আরেক পরিবারের ঘর বানিয়ে দেন, লোকালয়ে চলে আসা বন্য প্রাণীকে সুন্দরবনে নিয়ে ছেড়ে আসেন, গ্রামের মানুষের জন্য বিষমুক্ত সবজি চাষ করেন, করোনাকালে ছিন্নমূল মানুষকে খাওয়ান। সবকিছুই করেন বিনা পারিশ্রমিকে ও নিজ উদ্যোগে। আমরা এই তরুণকে ভালোবাসা ও সাধুবাদ জানাই।
সবশেষে বলতে হয়, গোটা বিশ্বের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের বড় একটি কেস স্টাডি হতে পারে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূল। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য নানা দেশি-বিদেশি অর্থের জোগান আমরা দেখি। কিন্তু সেসব অর্থ বরাদ্দ বা সহায়তার সুফল কতটা পায় জলবায়ু উদ্বাস্তুরা? সুতরাং আমি কর্তৃপক্ষকে আবেদন জানাই যেন তারা এই উপকূলীয় মানুষদের পানির সমস্যা অতি দ্রুত সমাধান করেন যেমন ভাবে এই তরুন করেছেন। একজন যদি পারেন তাহলে আমরা সবাই মিলে কেন পারবো না ?
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 100,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).