একটা রাষ্ট্র তখনই প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক হয়ে ওঠে, যখন তার সবচেয়ে প্রান্তিক মানুষও নাগরিক অধিকার ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকে না। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, প্রান্তিক মানুষেরাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তে অগ্রাধিকার পান না। নয়তো শেরপুরের ১৬টি জাতিগোষ্ঠীর প্রায় ৩৬ শতাংশ মানুষ স্কুলে যায়নি, এটি কী করে হয়। এসব জাতিগোষ্ঠীর ৪৮ শতাংশ মানুষের স্থায়ী কোনো কাজই নেই। বিষয়টি অবশ্যই হতাশাজনক।
‘শেরপুর জেলায় বসবাসরত জাতিগোষ্ঠীদের আর্থসামাজিক অবস্থা’ নিয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। জানা গেছে, জেলাটির সদর, ঝিনাইগাতী, নকলা, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী—এই পাঁচ উপজেলায় জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর লোকসংখ্যা মাত্র ২০ হাজার ৮৪০। এখানে গারো, কোচ, বর্মণ, হাজং, ডালু, হুদি, মসুর, মারমা, ম্রো, চাক, মাহালীসহ প্রায় ১৬টি জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। জনসংখ্যার দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি গারো, এরপর রয়েছে বর্মণ, কোচ, হুদি ও হাজং। নালিতাবাড়ীতে এদের জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
সাবেক জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার গত বছর জেলার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রকৃত অবস্থা জানতে তাদের নিয়ে একটি জরিপ করার জন্য পরিসংখ্যান ব্যুরোর কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে একটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই প্রথম কোনো জেলায় এ ধরনের জরিপ করা হয়। ৯ মাসের মধ্যে এ জরিপ করা হয়। গত সোমবার ব্যুরোর সেমিনার কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখান থেকে জানা যাচ্ছে, জাতিগোষ্ঠীগুলোর প্রাথমিক স্কুলগামী মানুষের সংখ্যা মাত্র ২০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। শিক্ষায় হাজং ও গারোরা এগিয়ে থাকলেও বাকিদের অবস্থা খুবই করুণ। এসব জাতিগোষ্ঠীর ১৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে কর্মসংস্থান আছে ৫১ দশমিক ৮৪ শতাংশের। এটি স্পষ্ট যে শিক্ষায় পিছিয়ে থাকার কারণে এর প্রভাব পড়েছে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও।
তবে বাসস্থান, বিদ্যুৎ–সংযোগ, নিরাপদ পানি ও উন্নত শৌচাগার সুবিধার দিক থেকে বেশ সন্তোষজনক অবস্থানে আছে জাতিগোষ্ঠীগুলো। এখন শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও তারা যেন সন্তোষজনক অবস্থানে যেতে পারে, সেই পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রথমত, শেরপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক ও বিবিএসকে সাধুবাদ জানাই এমন জরিপ চালানোর উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য। বিবিএস বলছে, পরবর্তী সময়ে তিন পার্বত্য জেলায়ও এমন জরিপ চালাবে তারা।
শেরপুরের সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীগুলোর জনসংখ্যা একেবারেই কম। তাদের উন্নতি–অগ্রগতিতে স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর ভূমিকা এখানে গুরুত্বপূর্ণ। খুব বেশি বরাদ্দ বা প্রকল্পের প্রয়োজন আছে তেমন নয়, প্রয়োজন হচ্ছে আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা। আমরা আশা করব, শেরপুরে পিছিয়ে থাকা জাতিগোষ্ঠীগুলোর শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে উন্নতিতে এমন প্রচেষ্টাই আমরা দেখব।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 50,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).