২৮ অক্টোবরকে ঘিরে নানা আলোচনা-শঙ্কার পর দিনটা পার হয়েছে। কিন্তু ঢাকা শহর একটা রক্তাক্ত দিন দেখল। থানা-পুলিশ আক্রমণের শিকার হয়েছে। বিচারপতির বাসভবনেও আক্রমণ করা হয়েছে। একজন পুলিশ সদস্যকে ঢাকার রাস্তায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিরোধী দলের একজন কর্মীও নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে বিএনপি রোববার হরতাল পালন করে। মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতিবার অবরোধ কর্মসূচি পালন ডেকেছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীরকে আটক করার পর গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বিএনপির নেতাদের ধরার জন্য তাঁদের অনেকের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে দেশের রাজনীতি একটা সংঘাতের দিকে যাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে।
বাংলাদেশ স্বাধীনের ৫২ বছর হয়েছে। ৫২ বছর পর এসেও প্রতি পাঁচ বছর পরপর দেশের সাধারণ মানুষকে চিন্তায় থাকতে হয় নির্বাচনকে নিয়ে। নির্বাচন এলেই দেশের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কখনো লগি-বইঠা, কখনো আগুন সন্ত্রাস।
ক্ষমতায় যাওয়া ও ক্ষমতায় থাকার এ লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি ভয় ও শঙ্কায় থাকতে হয় দেশের সাধারণ নাগরিকদের। যারা এক জীবনেও ক্ষমতার আশপাশে যাওয়া তো দূরে থাক, এসব রাজনৈতিক পালাবদলে তাদের কারও ভাগ্যই বদলায়নি। অথচ প্রতি নির্বাচনের সময় এ সাধারণ মানুষের অনেকের ভাগ্যে লেখা থাকে বেঘোরে মৃত্যু!
বড় দুটি রাজনৈতিক দল আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না করে রাজপথকেই কেন সমাধানের জায়গা মনে করছে—এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে হাজারটা প্রশ্ন থাকলেও তারা কিন্তু রাজপথকেই নিজেদের শক্তি দেখানোর জায়গা মনে করছে! কোথায় ভোট বাক্স ও ভোটের ফলাফল হওয়ার কথা ছিল শক্তি দেখানোর জায়গা।
যেখানে সাধারণ মানুষ তাদের পছন্দ-অপছন্দের প্রতিফলন দেখাতে পারবে। যার ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলো বলতে পারবে—সাধারণ মানুষের মতের প্রতিফলনই আমাদের শক্তি। এসব চর্চা না করে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো চর্চা করছে—রাজপথে শক্তি দেখানোর। কার কত লাঠিয়াল বাহিনী আছে। কে কত আক্রমণাত্মক হতে পারে। এর ভিত্তিতে শক্তি প্রদর্শন করার ব্যাপারটা বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক দিনের চর্চা। এটা কি কোনো সভ্য দেশের রাজনৈতিক চর্চা হতে পারে? সরকারি-বিরোধী দলের নেতারা নিজেদের বক্তব্যে এসব কথা বলে বেড়াচ্ছেন। তাঁরা ‘খেলাটা’ রাজপথেই খেলতে চান। ভোটের বাক্সে নয়!
আপনারা বড় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা যেহেতু আলোচনা করে মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার কোনো জায়গা খুঁজে পাচ্ছেন না তাই আপনারা রাজপথকেই বেছে নিয়েছেন। তাহলে দয়া করে নিজেদের মধ্যে এই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলাটা খেলার জন্য আলাদা জায়গা নির্ধারণ করে নিন।
যে জায়গায় আপনারা দুই দল মিলে মারামারি করে নিজেরা নির্ধারণ করবেন—কে জয়ী হবে! এতে অন্তত বেঘোরে সাধারণ কোনো মানুষকে মারা যেতে হবে না। তাদের ভয়ে থাকতে হবে না এ-ই ভেবে—রাস্তায় বের হলে না জানি কী হয়!
সাধারণ মানুষের ভাগ্য ৫২ বছরেও বদলায়নি। তাদের আজও তিন বেলার খাবার জোগাড় করার সংগ্রাম করতে হচ্ছে। চিকিৎসা না পেয়ে মরতে হচ্ছে। চিন্তা করতে হচ্ছে পরের দিন কীভাবে খাবার জোগাড় করা যাবে। এমন মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। মধ্যবিত্তরা হাঁসফাঁস করছে। কিন্তু বলতেও পারছে না তাদের ঘরেও খাবার জোগাড় করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কারণ, মধ্যবিত্তের আত্মসম্মানে যে বাঁধে!
অথচ আপনারা এখনো সেই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা খেলেই যাচ্ছেন ক্ষমতায় থাকা আর যাওয়ার নেশায়। আপনারা তা হলে মারামারি করুন নিজেদের মধ্যে। সাধারণ মানুষকে যেন এর মধ্যে প্রাণ দিতে না হয়। মৌলিক চাহিদাগুলো তো ৫২ বছরেও কেউ মেটাতে পারেননি। অন্তত প্রাণটা কেড়ে নেবেন না।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 100,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).